ডেঙ্গু ঢাকা ছাড়িয়ে বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে পড়লেও মশাবাহিত এই রোগ প্রতিরোধে সমন্বয়ের অভাব দেখছেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
এবার বর্ষার শুরুতেই ঢাকায় মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরের প্রাদুর্ভাব ঘটে, এখন ৫০ জেলায় ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। বছরের শুরু থেকে সোমবার পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ১৩ হাজার ৬৩৭ জন।
নাসিম বলেন, “ঢাকা শহরে ডেঙ্গুর ব্যাপক বিস্তারের কারণে একটি আতঙ্ক ও উৎকণ্ঠা সৃষ্টি হয়েছে। যেখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও উদ্বিগ্ন হয়েছেন। আমাদের কর্মকর্তারা এখন মাঠে নেমেছেন। ডেঙ্গু প্রতিরোধে কাজ শুরু হয়েছে ঠিকই, কিন্তু সমন্বয়ের অভাব রয়েছে।
“আমি অনুরোধ করতে চাই দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীকে .. স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করব, আপনি দুজন মেয়রকে সাথে নিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে বসুন। একরুমে এক সঙ্গে বসে প্রতিদিনের কাজটি মনিটরিং করুন।”
সমন্বিত অভিযানের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, “প্রতিদিনই দেখছি ডেঙ্গু রোগী বাড়ছে, হাসপাতালে জায়গা নেই। এর বিরুদ্ধে সমন্বিত অভিযান শুরু করতে হবে। বিচ্ছিন্নভাবে কিছু করলে হবে না। এই এডিস মশা খুবই ভয়ঙ্কর, দেশের অন্যান্য অঞ্চলে ছড়িয়ে গেছে। এটা ঢাকার মধ্যে ছিল। এখন দেখা যাচ্ছে জেলা-থানা পর্যায়ে ছড়িয়ে যাচ্ছে।”
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ১৪ দলের মুখপাত্র নাসিম ঢাকা শহরের মশা নিধনে সবাইকে নিয়ে কাজে নামতে দলের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।
“আজকে ঢাকার প্রতি ওয়ার্ডে যদি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা, ১৪ দলের নেতাকর্মী এবং কাউন্সিলররা যদি প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জনগণের কল্যাণের মনোভাব নিয়ে মশক নিধনে অংশগ্রহণ করেন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালায়, দেখবেন আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে পরিস্থিতি পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে।”
সভায় সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, “আসলে ডেঙ্গু হচ্ছে বড় লোকের মশা। বড় লোকের বাড়ি এর উৎপত্তিস্থল।”
মশা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার জন্য ঢাকার দুই মেয়রের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “আগে থেকেই এই ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করা উচিত ছিল। সেই ব্যবস্থা তারা করেনি।”
সাবেক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, “ডেঙ্গু কম-বেশি প্রতিবছরই হবে। মশা নিধন হয়ে গেছে, এটা বলা ঠিক হবে না।”
১৪ দলের শরিক বাংলাদেশ গণ আজাদী লীগের আয়োজনে ‘গুজব ও ডেঙ্গু প্রতিরোধে এবং সামাজিক অপরাধ দমনে করণীয়’ শীর্ষক এই আলোচনা সভায় সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়াও বক্তব্য রাখেন। এতে সভাপতিত্ব করেন গণআজাদী লীগের সভাপতি এ কে সিকদার।