জম্মু-কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা বাতিল নিয়ে তোলপাড় ভারতজুড়ে। মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) লোকসভায় জম্মু-কাশ্মীর পুনর্গঠন বিল উত্থাপন হতেই উত্তাল হয় সংসদ। যেমনটা গতকাল সোমবার (৫ আগস্ট) রাজ্যসভায় হয়েছিল।
কংগ্রেসের দাবি, জম্মু-কাশ্মীরের পুনর্গঠন নিয়ে সেখানকার বিধানসভায় কোনও আলোচনা না করে একতরফাভাবে বিল আনা হচ্ছে যা অনৈতিক। অবশ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পাল্টা দাবি, রাষ্ট্রপতির ৩৭০ ধারা বাতিলের ক্ষমতা রয়েছে। কংগ্রেসের সময়েও জম্মু-কাশ্মীরে দু’বার রাষ্ট্রপতির অধিকার প্রয়োগ করা হয়েছিল।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) লোকসভায় উত্থাপন হয় জম্মু-কাশ্মীর পুনর্গঠন বিল। শুরু হয় বিতর্ক। লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা সাংসদ অধীর চৌধুরী বলেন, ‘নিয়ম ভেঙে জম্মু-কাশ্মীর ভাগ করা হচ্ছে। সিমলা চুক্তি ও লাহৌর চুক্তি সত্ত্বেও কিভাবে এটা অভ্যন্তরীণ বিষয় হল? ওই দুই চুক্তি দ্বিপাক্ষিক ছিল। জম্মু-কাশ্মীরকে কয়েদখানা বানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
রাজ্যের মর্যাদা হারালো ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর
জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক দুই মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা ও ওমর গ্রেপ্তার
জম্মু-কাশ্মির থেকে আলাদা করা হলো লাদাখ
এর পাল্টা জবাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ প্রশ্ন তোলেন, ‘কোন নিয়ম ভাঙা হয়েছে?’ এরপর তিনি আরও যুক্তি দেন তিনি বলেন, ‘সংবিধানে জম্মু-কাশ্মীরকে দেশের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। জম্মু-কাশ্মীরের সংবিধানেও একই কথার উল্লেখ রয়েছে। তাই জম্মু-কাশ্মীরে আইন প্রণয়নে কোনও বাধা নেই।
অমিত শাহ আরও বলেন, জম্মু-কাশ্মীরের মধ্যে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরও রয়েছে। আকসাই চীনও ভারতের অংশ। রাষ্ট্রপতির ৩৭০ ধারা বাতিল করার ক্ষমতা রয়েছে।
কংগ্রেসের সময়েও দু’বার রাষ্ট্রপতি নিজের অধিকার প্রয়োগ করেছিলেন। সেই ক্ষমতা বলেই ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের বিজ্ঞপ্তিতে সই করেছেন রাষ্ট্রপতি। সংবিধান অনুসারেই জম্মু-কাশ্মীর পুনর্গঠন নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমার আশা, জম্মু-কাশ্মীর পুনর্গঠন বিল লোকসভায় পাশ হবে।’
এরপর কংগ্রেস সাংসদ মনীশ তিওয়ারি বলেন, ‘সংবিধানে বলা হয়েছে, কোনও রাজ্যকে ভাঙতে গেলে বা সীমানা বিন্যাস করতে গেলে সেখানকার বিধানসভায় আলোচনা করতে হবে। সংশ্লিষ্ট রাজ্যের মানুষের রায়ও নিতে হবে।
কিন্তু, জম্মু-কাশ্মীরে বিধানসভা এখন নেই, রাষ্ট্রপতি শাসন জারি রয়েছে। অথচ, সংসদকে জম্মু-কাশ্মীরের ভবিষ্যৎ স্থির করতে বলা হচ্ছে। এতে আমি খুব অবাক। তেলঙ্গানা রাজ্য তৈরির আগে অন্ধ্রপ্রদেশ বিধানসভায় এ নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। ইউপিএ সরকার কোনও অসাংবিধানিক কাজ করেনি।’