উন্মোচিত হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় মাদ্রাসা ছাত্রের মাথা বিহীন লাশ উদ্ধার ঘটনার। আলমডাঙ্গার কয়রাডাঙ্গা গ্রামের মাদরাসাছাত্র আবির হুসাইনকে মাদরাসার অন্য তিন ছাত্র খুন করছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
হত্যাকাণ্ডর ১৫ দিন পর গ্রেফতার হওয়া তিন ছাত্র রোববার আদালত স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আবিরকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে বলে পুলিশ জানায়।
তবে কী কারণ তারা আবিরকে হত্যা করেছে সে রহস্য এখনও উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ।
জানাগেছে, চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজলার চিৎলা ইউনিয়নর কয়রাডাঙ্গা নুরানি হাফেজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানার দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র আবির হুসাইনকে (১১) ২৩ জুলাই রাতে মাদরাসার পাশের একটি আম বাগানে খুন করা হয়।
পরদিন সকালে আবির হুসাইনের মাথাবিহীন ধড় উদ্ধার করে পুলিশ। ওই দিন মাদরাসার দুই শিক্ষক মাও. আবু হানিফ ও তামিমদারী ওরফ তামিমকে জিজ্ঞাসাবাদর জন্য আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ আটক করে। এর পরদিন মাদরাসা ছাত্র আবিরের মাথা উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় আরও তিন শিক্ষককে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। অন্য তিন শিক্ষককে ছেড়ে দেয়া হলেও মাও. আবু হানিফ ও তামিমদারী ওরফ তামিমকে ৩০ জুন গ্রেফতার দেখিয়ে জেলহাজতে প্ররণ করা হয়।
এই দুই শিক্ষককে ৫ দিনের রিমান্ড নিয়ে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে। ৩১ জুলাই থেকে ওই দুই শিক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে মাদরাসার আরও ৫ ছাত্রকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।
চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান জানান, মাদরাসা ছাত্র আবির হত্যাকাণ্ড নিয়ে আমরা খুব সাবধানে এগোচ্ছি। আবির হুসাইনের হত্যাকারী ওই মাদরাসার তিন ছাত্র।
তিনছাত্র চুয়াডাঙ্গা সদর উপজলার হানুরবাড়াদী গ্রামের আনিছুজ্জামান, টইপুর গ্রামের ছালিমীর হাসান ও আবদবাড়িয়ার আবু হানিফ রাতুল।
অন্য দুই ছাত্র হলো বলদিয়া গ্রামের মোনায়েম হাসান ও আকদবাড়িয়ার আবু নুর।
মাদ্রাসার পার্শ্ববর্তী কেডিবি ইটভাটার পাশে সকালে ওই ছাত্রের মাথাবিহীন ধড় পড়ে থাকত দেখে চমকে ওঠে এলাকাবাসী। নিহত বালক আবির হাসন ঝিনাইদহর কালীগঞ্জ উপজলার খালিশপুর গ্রামের প্রবাসী আলী হোসেনের ছেলে।
জানা গেছে, আলমডাঙ্গা উপজলার কয়রাডাঙ্গা গ্রামের নুরানি হাফজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানায় মাস ছয়েক আগে আবির হোসেন (১১) ভর্তি হয়। এখানকার এতিমখানায় থাকতো সে।

মাদ্রাসার প্রধান মুহতামিম মুফতি মাহাম্মদ আবু হানিফ ঘটনার দিন জানিয়েছিলেন, ‘মঙ্গলবার এশার নামাজর সময় ওজু করত বেরিয়ে সে আর মাদ্রাসার কক্ষে ফেরেনি। রাতেই পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়। বুধবার সকালে মাদ্রাসার নিকটবর্তী ইটভাটার পাশ তার মাথা বিহীন লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয়া হয়।’
এদিক মাদরাসার প্রধান মুহতামিম মাও. আবু হানিফকে আটকের পর পুলিশের বরাত দিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম খবর প্রকাশ পায়। তাতে বলা হয় ঘটনার দিন রাতে শুধু আবির হুসাইন নিখোঁজ ছিল। অন্য সবাই মিলে আবিরকে খোঁজা হয়।
তাহলে গতকাল যে তিন ছাত্র হত্যার ব্যাপারে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলো তারা ঘটনার রাতে তো মাদরাসাই ছিলো।
এ নিয়ে সাধারণ মানুয়ের মধ্যে হত্যা রহস্য নিয়ে নানা রকম প্রশ্ন দানা বেধে উঠেছে।
এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমানও একই রকম ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন, হত্যা রহস্য নিয়ে আমরা এখনও কাজ করছি। কী কারণ এ হত্যার ঘটনা এবং সাথে আর কারা কারা থাকতে পারে তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।