সম্প্রতি কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা সংক্রান্ত সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করেছে ভারত। ক্ষমতাসীন মোদী সরকারের এই সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে কাশ্মীরকে রাজ্য থেকে পরিণত করেছে কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে।কাশ্মীরের অলিগলিতেও সেনা টহল চলছে গণগ্রেফতার। এতে বিচ্ছিন্নভাবে ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে প্রতিবাদমুখর কাশ্মীরিরা।নূন্যতম প্রতিবাদ করারও সাহসটুকু কেড়ে নেওয়া হয়েছে কাশ্মীরিদের। তারপরও সেনা টহল উপেক্ষা করে বিজেপি সরকারের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে তারা বিক্ষোভ করছেন।
ভারতের গণমাধ্যম জানায়, সাবেক দুই মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও দুদিনে এ পর্যন্ত কারাগারে মানবাধিকারকর্মীসহ অন্তত ৪শ’ কাশ্মীরী। বিষয়টি নিয়ে উত্তেজনা ছিল খোদ লোকসভাতেও। বিরোধীদের তোপের মুখে এ বিষয়ে মুখ খোলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও। সাবেক মুখ্যমন্ত্রী এবং লোকসভার বর্তমান এমপি ফারুক আবদুল্লাহর অভিযোগ তাকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাত বিজেপি সরকারকে সমর্থন জানালেও ভারতের সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছে চীন। কাশ্মীরে ধরপাকড় ও অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ।
জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার রুপার্ট কলভাইল বলেন, যেভাবে টেলিযোগাযোগ বন্ধ রেখে, নেতাদের আটক ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশে বাধা দেয়া হচ্ছে, এতে আমাদের আশঙ্কা কাশ্মীরে চরম আকারে মানবাধিকার লঙ্ঘন চলছে।এমন পরিস্থিতিতে,ইমরান খান বলেন, কাশ্মীরের জনমিতি পাল্টে দিতে চায় মোদি সরকার। কাশ্মীরিদের ওপর আর কোনও নিপীড়ন মেনে নেবে না পাকিস্তান। এতে যদি ভারত আমাদের ওপরও হামলার চেষ্টা করে তবে কঠিন জবাব দেওয়া হবে। যুদ্ধ লেগে যাবে।
এদিকে, সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলুপ্তির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে রিট করেছেন এক আইনজীবী। আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আদালতে বাধার মুখে পড়তে পারে মোদীর সিদ্ধান্ত।
ভারতের সংবিধান বিশেষজ্ঞ সঞ্জয় কুমার সিং বলেন, ৩৭০ অধ্যাদেশ ছিল, কাশ্মীরের সাথে কেন্দ্রীয় সরকারের একটি সেতুবন্ধন। এটি বিশ্ববাসীকে স্পষ্ট করেছিল ভারত প্রকৃতই গণতান্ত্রিক দেশ। কোনও পুলিশি বা স্বৈরাচারী রাষ্ট্র নয়। রাষ্ট্র আদৌ এভাবে রাজ্যের মর্যাদা কেড়ে নিতে পারে কী? এটা আইনের অবমাননা কী না-তা একটি মৌলিক প্রশ্ন। আমার মনে হয়, আদালত নেতিবাচক উত্তরই দেবেন।
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিবৃতি, পরিস্থিতি উন্নতি হলে ফের রাজ্যের মর্যাদা ফিরে পেতে পারে কাশ্মীর। টুইটারে মোদির দাবি, একে স্বাগত জানিয়েছে কাশ্মীরবাসী।