প্রফেসর ড. মোঃ আলিমুল ইসলাম:ডেঙ্গুজ্বর নারী-পুরুষ নির্বিশেষে যে কোন বয়সে হতে পারে। এই নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। ডেঙ্গুজ্বর অন্যান্য ভাইরাসজনিত জ্বর থেকে কিছুটা আলাদা। এই জ্বর কোন ভাবেই ছোঁয়াচে না এবং বাতাস দ্বারাও ছড়ায় না। এটি একটি মশা (এডিস মশা) বাহিত ভাইরাসজনিত রোগ। এবারের (২০১৯) ডেঙ্গুজ্বরের লক্ষন ও তীব্রতা বিগত বছর গুলোর তুলনায় কিছুটা আলাদা হলেও ২০০২ সালে বাংলাদেশে যে ডেঙ্গু জ্বর হয়েছিল তার সঙ্গে অনেকটাই মিল রয়েছে, কারণ রোগের তীব্রতা, রোগ ছড়ানোর প্যাটার্ন এবং রোগীর মৃত্যুর হার প্রায় একই রকম।
২০০২ সালে বাংলাদেশে যে ডেঙ্গু জ্বর হয়েছিল ঐ সময়ের ভাইরাসটির Predominant sero type ছিল টাইপ-৩। ২০১৯ সালের ডেঙ্গু আউটব্রেকের sero type টিও Predominantly টাইপ-৩। ডেঙ্গুরোগের ক্ষেত্রে এধরনের মহামারীকে সচরাচর বলা হয়ে থাকে ডেঙ্গু ভাইরাস টাইপ-৩ এর ২য় ওয়েব। এই ধরনের ওয়েব সচরাচর ১৫ থেকে ২০ বছর পর পর ডেঙ্গু ভাইরাস যে কোন সিরো টাইপ দ্বারা হতে পারে। ২০০২ সালে বাংলাদেশে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত রোগীর রক্তের নমুনা WHO এর রেফারেন্স সেন্টার (আইটিএম, নাগাসাকি, জাপান)-এর সহযোগীতায় পরীক্ষা করে শুধু মাত্র ডেঙ্গু ভাইরাস টাইপ-৩ নিশ্চিত করা হয়েছিল।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড হাইজিন বিভাগের প্রফেসর ড. মোঃ আলিমুল ইসলাম উক্ত গবেষণায় সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলেন এবং তিনি উক্ত ভাইরাস (৮টি ডেঙ্গু ভাইরাস টাইপ-৩ আইসোলেট) এর মধ্যে চারটি আইসোলেট ও তাদের মিউটেন্ট ভাইরাস সমূহের পূর্ণাঙ্গ জীবন রহস্য প্রথম বারের মত উন্মোচন করেন।
উল্লেখ্য প্রফেসর ড. ইসলাম এর পূর্বে বাংলাদেশী ডেঙ্গু ভাইরাস টাইপ-৩ আইসোলেটের পূর্ণাঙ্গ জীবন রহস্য পূর্বে পৃথিবীর কোন দেশের বিজ্ঞানী উন্মোচন করতে সক্ষম হন নাই। বাংলাদেশী ডেঙ্গু ভাইরাস টাইপ-৩ আইসোলেট গুলির জীবন রহস্য (sequence) এর accession number AY496871, AY496873, AY496874, DQ401692, DQ401693, DQ401689 আপনাদের অবগতির জন্য প্রকাশ করা হল।
ডেঙ্গু ভাইরাসের বাহক
এটি একটি মশা বাহিত রোগ।এ রোগের বাহক স্ত্রী এডিস প্রজাতির মশা (এডিস এজিপটাই ও এডিস এলবোপিকটাস)। স্ত্রী এডিস প্রজাতির মশা ছাড়াও অন্যান্য প্রজাতির স্ত্রী মশা ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তির রক্ত ভক্ষন করলে তাদের শরীরেও ডেঙ্গু ভাইরাস এর অস্তিত্ব মাঝে মাঝে পাওয়া গেলেও অন্য প্রজাতীর স্ত্রী মশা দ্বারা ডেঙ্গু ভাইরাস ছড়ানোর সম্ভাবনা একেবারেই নেই। কারন স্ত্রী এডিস মশা শরীরেই কেবল ডেঙ্গু ভাইরাস এর রিসেপ্টর থাকে বিধায় তাদের শরীরেই একমাত্র প্রাথমিক বংশ বিস্তার সম্ভব যার ফলে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তির রক্তখেকো স্ত্রী মশার সিলিভারী গ্লেন্ডে অধিক পরিমান ভাইরাস থাকে এবং পরবর্তীতে অন্য ব্যক্তিকে কামড় দেওয়ার সময় সহজেই তা উক্ত ব্যক্তির শরীরে ছড়ায়।
উল্লেখ্য স্ত্রী এডিস প্রজাতির মশা ডিম পারার জন্য কেবল মাত্র ঐ সকল ব্যাক্তির রক্ত ভক্ষন করে যাদের রক্তে অধিক পরিমান শর্করা, আমিষ ও আইরন থাকে। এই প্রজাতির মশা কখনোই সত্যিকারের ফকির ও মিসকিনের রক্ত ভক্ষন করেনা। এটা হয়তবা এ মশার প্রতির মহান আল্লাহ পাকের নির্দেশ। মশা মানুষের চেয়ে ছোট প্রাণী হলেও এরা মানুষের জম। কারণ নাস্তিক শাসক নমরুদ এবং মহাপরাক্রমশালী সম্রাট আলেকজান্ডার এই মশার কামরেই যথাক্রমে ওয়েষ্টনাইল ভাইরাস এবং ম্যালেরিয়ার জীবানু দ্বারা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
ডেঙ্গুজ্বরের মশার বংশ বৃদ্ধি ও পরিবেশের ভূমিকা
এডিস মশা সচারাচর আবদ্ধ জলাধারে বংশ বৃদ্ধি করে থাকে, যেমনঃ আবদ্ধ ড্রেন, কৌটা, টায়ার, ডাবের খোল, টব, এসি ও অন্যান্য পাত্রে জমে থাকা পানিতে। অপরিষ্কার পরিবেশই মশা-মাছি সহ অন্যান্য কীট পতঙ্গের বংশ বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করে। তাই বিশ্বনবী হজরত মোহাম্মদ(সাঃ)আজ থেকে ১৪০০ বছর আগে যে কথাটি পৃথিবীর সকল দেশ, ধর্ম ও বর্নের মানুষের জন্য বলেছিলেন তা হল, ‘পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ।’ [মুসলিম : ২২৩] তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত উক্ত মহামূল্যবান উক্তিটির প্রতি সম্মান জানিয়ে আমাদের নিজেদের ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থে তা পালন করা।
ডেঙ্গুজ্বর কিভাবে হয়?
ডেঙ্গুজ্বর একপ্রকার ভাইরাস দ্বারা সংঘটিত হয়।
ডেঙ্গুজ্বরের ভাইরাসের বৈশিষ্ট
এটি একটি ফ্লাভি গোত্রের(পজেটিভ সেন্স)ইনভেলাপ্ট সম্বলিত আরএনএ ভাইরাস।এই ভাইরাস এর চারটি সিরোটাইপ রয়েছে (ডেন-১, ডেন-২, ডেন-৩ ও ডেন-৪)। এই ভাইরাসের জেনমে চারটি (সি, প্রিএম, এম ও ই) স্ট্রাকচারাল এবং সাতটি (এনএস-১, এনএস-২এ, এনএস-২বি, এনএস-৩, এনএস-৪এ, এনএস-৪বি, ও এনএস-৫) নন-স্ট্রাকচারাল প্রোটিন রয়েছে। চারটি স্ট্রাকচারাল প্রোটিন এর মধ্যে ই প্রোটিন অত্যান্ত গুরুত্ব পূন্য। ই প্রোটিনই রোগ সৃষ্টি এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য দায়ী।
ডেঙ্গুজ্বরের ভাইরাস বাহক মশা কামড়ের কতদিন পর রোগের লক্ষন দেখা দিবে?
ভাইরাসের ঘনত্বের মাত্রার উপর নির্ভর করে মশার কামড়ের ৩ থেকে ৭ দিনের মধ্যে এ রোগের লক্ষন দেখা দিতে পারে।
ডেঙ্গুজ্বরের লক্ষন সমূহ
(১)প্রচন্ড মাথা ব্যাথা
(২)জ্বর (১০৩ থেকে ১০৬০ ফাঃ)
(৩) বমি বমি ভাব/অস্বাভাবিক বমি (ঘণ ঘন বমি)
(৪) পেট ব্যাথা
(৫) চোখ ব্যাথা
(৬) সমস্থ শরীর ব্যাথা
(৭) গিরায় গিরায় ব্যাথা
(৮) চামরা নীচে লাল লাল ফুসকুড়ি উঠা
(৯) মাড়ি দিয়ে রক্ত পরা
(১০) চোখের সাদা অংশে রক্ত জমা হওয়া
(১১) রক্ত পায়খানা ও রক্ত পশ্রাব হওয়া (সকল ক্ষেত্রে নয়)
(১২)জ্বরের ঔষধ (প্যারাসিটামল)খাওয়ানোর ১ থেকে ২ ঘন্টা পর রোগীর জ্বর পূর্বের অবস্থায় ফিরে যাওয়া(১০৩ থেকে ১০৬০ ফাঃ)
(১৩) কোন কোন ক্ষেত্রে (ডেঙ্গি সক সিনড্রোম) অজ্ঞান হয়ে যাওয়া
(১৪) মহিলাদের ক্ষেত্রে ঋতুস্রাব অস্বাভাবিক ও প্রলম্বিত হতে পারে
ডেঙ্গুজ্বরের ভাইরাস কিভাবে ছড়ায়?
(১) ভাইরাস বাহিত মশার কামরে
(২) ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তির রক্ত সুচ অথবা অন্য কোন মাধ্যমে সুস্থ ব্যক্তির রক্তের সংস্পর্শে আসলে।
(৩)নবজাতক শিশুর ক্ষেত্রে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত মায়ের দুগ্ধ পানের মাধ্যমে।
(৪) ডেঙ্গুজ্বরের ভাইরাস ছোঁয়াচে রোগ না।
ডেঙ্গুজ্বরের প্রকার:ক্লাসিক্যাল জ্বর, হিমোরেজিক জ্বর ও ডেঙ্গি সক সিনড্রোম।
এশিয়ার কোন কোন দেশে ডেঙ্গু জ্বর সারা বছর হয়ে থাকে:সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, থাইলেন্ড, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম, লাউস, কম্বোডিয়া, ফিলিপাইন।
এশিয়ার কোন কোন দেশে ডেঙ্গু জ্বর মৌসম ভিত্তিক হয়ে থাকে:বাংলাদেশ, ইন্ডিয়া, পাকিস্থান, আবগানিস্থান, শ্রীলঙ্কা, মায়ানমার
কারা কারা ডেঙ্গুজ্বরে মারাত্বক ঝুকির সম্মুখীন?
(১) ডেঙ্গুজ্বরে দ্বিতীয় বার থেকে উর্ধে আক্রান্ত রোগীরা
(২) ডায়াবেটিস রোগীদের দ্বিতীয় বার ডেঙ্গুজ্বর হলে
(৩) ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর ডেঙ্গুজ্বর হলে
(৪) উচ্চ রক্তচাপের ব্যক্তির ডেঙ্গুজ্বর হলে
(৫) টাইফয়েড, ম্যালেরিয়া, কালা জ্বর, জাপানিজ ইনক্যাফালাইটিস ও চিকুনগুনিয়ার সঙ্গে ডেঙ্গুজ্বর হলে
(৬) গর্ভবতী মহিলার ডেঙ্গুজ্বর হলে
(৭) ৫ বছরের কম বয়সী ও বয়স্ক (৭০ উর্ধ) ব্যক্তির ডেঙ্গুজ্বর হলে
কিভাবে নিশ্চিত করবেন আপনি ডেঙ্গুজ্বরে প্রথম বা দ্বিতীয় বার আক্রান্ত হয়েছেন?
(১) জ্বর অবস্থায় ১ থেকে ৬ দিনের মধ্যে রক্ত পরীক্ষা করলে (এনএস-১ এন্টিজেন, আইজিজি ও আইজিএম ক্যাপচার ইলাইজা ও রক্তের সিবিসি পরীক্ষা)
(২) আক্রান্ত রোগীর রক্তের নমুনা থেকে প্লাজমা বা সিরাম (জ্বর যখন ১০৩ থেকে ১০৬০ ফাঃ থাকে) থেকে ডেঙ্গু ভাইরাসের আরএনএ নিষ্কাশন করে ইউনিপ্লেক্স বা মাল্টিপ্লেক্স পিসিআর এর মাধ্যমে
(৩) ডেঙ্গুজ্বরে প্রথম বার আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রে জ্বর অবস্থায় ১ থেকে ৫ দিনের মধ্যে রক্তের নমুনা করলে আইজিজি ও আইজিএম উভয় পরীক্ষা নেগেটিভ হবে, তবে জ্বর অবস্থায় ২ থেকে ৫ দিনের রক্তের নমুনা এনএস-১ এন্টিজেন পরীক্ষা করলে অবশ্যই ডেঙ্গি জ্বর নিশ্চিত করা যাবে
(৪) ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রে ১ থেকে ৬ দিনের রক্ত পরীক্ষা করলে যদি শুধু মাত্র আইজিএম পরীক্ষার ফলাফল পজেটিভ হয়, তাহলে ঐ রোগী প্রথম বার আক্রান্ত বলে নিশ্চিত, অপর পক্ষে একই সময়ের রক্ত পরীক্ষা করে যদি আইজিজি এবং আইজিএম উভয়ই পরীক্ষার ফলাফল পজিটিভ হয় তা হলে অবশ্যই ঐ রোগী ২য় বার ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত।
ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হলে করনীয়
(১) শহর এলাকায় এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে কোন রোগীর ক্ষেত্রে জ্বরসহ উপরোল্লিখিত উপসর্গ দেখা দিলে প্রথমেই নিকটস্থ ডাক্তারে স্মরণাপন্ন হওয়া
(২) জ্বর উপশমের ঔষধ নিয়মিত সেবনের পাশাপাশি অধিক মাত্রায় তরল পানীয় (খাবার স্যালাইন, ফলের রস, ডাবের পানি ও স্যুপ) পান করতে হবে।
(৩) জ্বর অবস্থায় ও জ্বর সেরে যাওয়ার পরেও প্রায় ৩ থেকে ৪ সপ্তাহ পর্যন্ত পূর্ন বিশ্রামে থাকতে হবে।
(৪) জ্বর অবস্থায় ডেঙ্গু নিশ্চিত হলে কোন অবস্থায় এসপিরিন বা ডিসপিরিন জাতীয় ঔষধ সেবন করা যাবে না
(৫) জ্বর অবস্থায় প্যারাসিটামলের পাশাপাশি ডাক্তোরের পরামর্শ অনুযায়ী এন্টিবায়োটিক সেবন করতে হবে, পরিস্থিতি বিবেচনা করে
(৬) ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত রোগীর রক্তের অনুচক্রিকার পরিমান যখন ১০০০০ এর নীচে আসবে তখনই কেবলে উক্ত রোগীর শরীরে অনুচক্রিকা সঞ্চালন করতে হবে।
ডেঙ্গুজ্বর প্রতিরোধে করনীয়
(১) দেশ-বিদেশের ভ্রমনকারীদের প্রতিনিয়ত নজরদারীর মধ্যে রাখতে হবে। এই ক্ষেত্রে বিমান বন্দর/সমুদ্র বন্দর এলাকায় অবস্থিত শহরে, যেহেতু এ রোগ বেশী হয়, বলতে গেল ডেঙ্গু জ্বর একটি মেগাসিটি বেজস্ট ভাইরাস জনিত রোগ, তাই এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার সাথে সাথে বড় শহরের ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত লোকজনকে সম্পূর্ণ সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত ছোট শহর গুলিতে ভ্রমন বা যাতায়ত করতে না দেওয়া। আশার কথা প্রত্যন্ত গ্রামের লোকজন সচরাচর ডেঙ্গিজ্বরে আক্রান্ত হয় না, যতক্ষন পর্যন্ত শহর থেকে আক্রান্ত রোগী গ্রামে না যায়।
(২) পূর্ণ বয়স্ক এডিস মশা নিধনে নিয়মিত মশা নিধনকারী স্প্রে করতে হবে।
(৩)এডিস মশার বৃডিং প্লেস নষ্ট করে সদা সুস্থ পরিবেশ রক্ষা করতে হবে
(৪)এডিস মশার লার্ভা ধংশ করতে হবে (আবদ্ধ জলাধার ছোট হলে পুরে ফেলতে হবে, বড হলে পানির উপরে কেরোসিন বা পুরা মোবিল ডেলে দিলে বাতাসের অক্সিজেন পানিতে প্রবেশ করতে না পারলে এডিস মশার লার্ভা গুলি মারা যাবে। এছাড়া জলাধার আরও বড় হলে তেলাপিয়া জাতীয় মাছ চাষ করলে এডিস মশার লার্ভাও ধংশ হবে এবং মাছও বৃদ্ধি পাবে)।
(৫)এশিয়ার বেশ কটি দেশ ডেঙ্গু জ্বর থেকে রক্ষা পেতে নিয়োমিত টিস্যু কালচার বেজড ইনএক্সিভেটেড টেট্রাভেলেন্ট (ডেঙ্গু ভাইরাস টাইপ -১, ২, ৩, ৪) ভ্যাকসিন ব্যবহার করছে।
(৬) ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধে টিস্যু কালচার বেজড ইনএক্সিভেটেড টেট্রাভেলেন্ট (ডেঙ্গু ভাইরাস টাইপ -১, ২, ৩, ৪) ভ্যাকসিন বেশ কার্যকরী এবং এ ভ্যাকসিন তৈরীর পদ্ধতিও সহজ। বাংলাদেশেও এদেশের ডেঙ্গু ভাইরাস দিয়ে ডেঙ্গু জ্বরের কার্যকরী ভ্যাকসিন তৈরী করতে ও এদেশের মানুষের জন্য ব্যবহার করতে পারে। তবে টিস্যু কালচার বেজড ইনএক্সিভেটেড টেট্রাভেলেন্ট (ডেঙ্গু ভাইরাস টাইপ -১, ২, ৩, ৪) ভ্যাকসিন মশার সেল লাইন (সি৬/৩৬ই/এম) ব্যবহার করে সঠিক ভাবে ইনএক্সিভেটেড করে ফাষ্ট ফেজ (শিম্পাঞ্জীতে) এবং সেকেন্ড ফেজ (মানুষে)ট্রায়াল দেওয়ার পর সিরাম এন্টিবডি টাইটার নির্ণয়ের পর গন টিকা হিসাবে এদেশের মানুষের জন্য ব্যবহার করতে পারে।
বিঃদ্রঃ মনে রাখতে হবে, মানুষ যে কোন সময় ডেঙ্গুজ্বরের ভাইরাস ছাড়াও অন্য যে কোন মারাত্নক ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে। প্রতিটি ভাইরাস জনিত রোগই মানুষের জন্য হুমকি। আমরা যদি সদা নিজ নিজ স্বাস্থ্য সচেতন থাকি, সদা পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখি এবং রোগ হলে সাথে সাথে চিকিৎসকের পরামর্শ নেই তাহলে ডেঙ্গুজ্বর সহ যে কোন রোগকে সহজেই মোকবেলা করতে পারবো। ইনশাআল্লাহ।
===============
লেখক পরিচিতি
মাইক্রোবায়োলজি এন্ড হাইজিন বিভাগ
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
ময়মনসিংহ-২২০২