দ্যা নিউজ বিডি, নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনাকালীন এই সময়ে সবাই বন্দিঘরে, কিন্তু এর মধ্যেও খোকনের প্রতিটি দিন কাটে চরম ব্যস্ততায়। হঠাৎ করে থমকে যাওয়া ব্যস্ত শহুরে জীবনযাত্রাকে সচল ও নিরাপদ রাখার লক্ষ্যে সে প্রতিদিনই পৌঁছে যায় শহরের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে।
মফস্বল থেকে কলেজ পাশ করে ঢাকায় স্নাতক করতে এসেছে খোকন। বাড়িতে তার মা আর বড় ভাই আছে। ঢাকায় এসে ফুডপ্যান্ডা’য় পার্ট-টাইম কাজ করে নিজের খরচ নিজেই চালায় সে। ফুডপ্যান্ডা মূলত নাগরিকদের সুবিধার্থে স্থানীয় রেস্টুরেন্টগুলোর সাথে সমন্বয় করে পছন্দের খাবার সবার দোরগোড়ায় পৌঁছানোর সেবা দেওয়া একটি ব্র্যান্ড। আর ডেলিভারিম্যান হিসেবে গ্রাহকের পছন্দ অনুযায়ী খাবার তার ঠিকানায় পৌঁছে দেওয়াই খোকনের কাজ।
কোভিড-১৯-এর কারণে ক্লাস বন্ধ থাকায় এখন খোকন ফুল-টাইম ফুড ডেলিভারির কাজ করে যাচ্ছে। আর তাই তার পরিবারের লোকজন সারাক্ষণই তাকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকে। খোকন বারবারই সবাইকে আশ্বস্ত করে বলে নিশ্চিন্তে থাকতে, সে সব নিয়ম-কানুন মেনেই চলছে। আর এই সময়টায় সে যতটা পারে মানুষকে সাহায্য করতে চায়।
মহামারীর এই প্রকোপকালে সব ভয়কে জয় করে, নিজের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সেবাগ্রহীতাদের জন্যও সর্বোচ্চ সতর্কতার সাথে নিয়মিত মানসম্মত খাবার ডেলিভারি দিয়ে যাচ্ছেন খোকনের মতো এমন অসংখ্য ডেলিভারিম্যান। লকডাউনে দেশ যখন অচল প্রায়, তখনও সচলভাবে দায়িত্ব পালন করে চলেছেন তারা।
নিজের ও পরিবারের সুরক্ষার কথা চিন্তা করে দেশ জুড়ে মানুষ যখন প্রায় তিন মাস ধরে যার যার ঘরে বন্দি, খাবারের ব্যাপারে তাদের চিন্তা-দুশ্চিন্তা কমিয়ে নির্ভরযোগ্য হয়ে উঠেছে সাধারণ পোশাকে অসাধারণ কাজ করা এই মানুষগুলো।
বাসায় বসে অফিসের কাজের চাপে রান্না করার সময় পান না অনেকেই, বাইরে বের না হতে পারার কারণে খাবারের রসদও শেষ হয়ে যেতে পারে। এছাড়াও অনেকদিন পছন্দের রেস্টুরেন্টের খাবার না খেয়ে নতুন কোনো খাবার চেখে দেখার ইচ্ছেটাও দেখা দেয় প্রায়ই। কারণ যেটাই হোক, ফুডপ্যান্ডার মাধ্যমে অনলাইনে খুব সহজেই পছন্দসই খাবার অর্ডার করে সবাই থাকছেন নিশ্চিন্ত। নিরাপত্তা নিশ্চিত করে, পছন্দের খাবার সুরক্ষিত রেখে প্রতিদিন সময়মতো অন্যের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া এই রাইডাররাও তাই এই সময়ের নতুন যুদ্ধটির একেকজন অসমসাহসী সম্মুখযোদ্ধা।