দ্যা নিউজ বিডি অনলাইন ডেস্ক: করোনা পরিস্থিতির কারণে দুই সপ্তাহ পিছিয়ে যাওয়া অমর একুশে বইমেলা আজ মঙ্গলবার থেকে শুরু হতে যাচ্ছে। বিকেল ৩টায় প্রধান অতিথি হিসেবে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এই মেলার উদ্বোধন করার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।প্রতি বছর মাসব্যাপী হলেও এবার মেলার ৩৮তম আসর চলবে ১৪ দিন, শেষ হবে ২৮ ফেব্রুয়ারি। তবে দেশে করোনা সংক্রমণের হার কমলে মেলার দিন বাড়ানো হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। এবার মেলার প্রতিপাদ্য ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী’। এই প্রতিপাদ্য নির্ধারণের বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে উল্লেখ করে বইমেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব জালাল আহমেদ বলেন, ‘এবার ভাষা আন্দোলনের ৭০ বছর। একই সঙ্গে এ বছর আমাদের সংবিধান প্রণয়নের পঞ্চাশ বছরও। ভাষা আন্দোলন, বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা ও সংবিধানপ্রাপ্তির এই বিশেষ সময়ে বাঙালিত্বের চেতনাজাগানিয়া বইমেলার আয়োজন আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’ বইমেলা ১৫-২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন বেলা ২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। রাত সাড়ে ৮টার পর নতুন করে কেউ মেলা প্রাঙ্গণে ঢুকতে পারবে না। ছুটির দিন মেলা চলবে বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। ২১ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টায় শুরু হয়ে মেলা চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ এবং ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় সাড়ে ৭ লাখ বর্গফুট জায়গাজুড়ে এবারের বইমেলা বিস্তৃত থাকবে।এর মধ্যে একাডেমি প্রাঙ্গণে ১০২টি প্রতিষ্ঠানকে ১৪২টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৪৩২টি প্রতিষ্ঠানকে ৬৩৪টি ইউনিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে মোট ৫৩৪টি প্রতিষ্ঠান ৭৭৬টি ইউনিট বরাদ্দ পেয়েছে। মেলায় প্যাভিলিয়ন থাকবে ৩৫টি। এবার লিটল ম্যাগাজিন চত্বর স্থানান্তরিত হয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের এম্ফি থিয়েটারের পূর্ব দিকে মেলার মূল প্রাঙ্গণে। সেখানে ১২৭টি লিটল ম্যাগকে স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
বইমেলায় বাংলা একাডেমি এবং মেলায় অংশগ্রহণকারী অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ২৫ শতাংশ কমিশনে বই বিক্রি করবে। বাংলা একাডেমির ৩টি প্যাভিলিয়ন, শিশু-কিশোর উপযোগী বইয়ের জন্য ১টি এবং সাহিত্য মাসিক উত্তরাধিকার-এর ১টি স্টল থাকবে। এবারও শিশুচত্বর মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে থাকবে। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রথম দিকে ‘শিশুপ্রহর’ থাকবে না। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা থাকবে। মেলার প্রচার কার্যক্রমের জন্য একাডেমিতে বর্ধমান ভবনের পশ্চিম বেদিতে ১টি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ২টি তথ্যকেন্দ্র থাকবে। বইমেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৪টি প্রবেশপথ ও ৩টি বাহিরপথ থাকবে। বিশেষ দিনগুলোতে লেখক, সাংবাদিক, প্রকাশক, বাংলা একাডেমির ফেলো এবং রাষ্ট্রীয় সম্মাননাপ্রাপ্ত নাগরিকদের জন্য প্রবেশের বিশেষ ব্যবস্থা করা হবে। মেলার সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে পুলিশ, র্যাব, আনসার, বিজিবি ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। নিশ্চিদ্র নিরাপত্তার জন্য মেলা এলাকাজুড়ে তিনশর বেশি ক্লোজসার্কিট ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। বইমেলা পলিথিন ও ধূমপানমুক্ত থাকবে। মেলা প্রাঙ্গণ ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় (সমগ্র মেলা প্রাঙ্গণ ও দোয়েল চত্বর থেকে টিএসসি হয়ে শাহবাগ, মৎস্য ভবন, ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট হয়ে শাহবাগ পর্যন্ত এবং দোয়েল চত্বর থেকে শহীদ মিনার হয়ে টিএসসি, দোয়েল চত্বর থেকে চানখাঁরপুল, টিএসসি থেকে নীলক্ষেত পর্যন্ত) নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকবে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী নিয়ে প্রতিদিন বিকেল ৪টায় বইমেলার মূল মঞ্চে সেমিনার হবে। প্রতিদিন সন্ধ্যায় থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।