দ্যা নিউজ বিডি,আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রাশিয়া থেকে তেল-গ্যাস ও কয়লা আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে হু হু করে বাড়ছে জ্বালানির দাম। দেশে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির জন্য জন্য রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতনিকে দায়ী করেছেন বাইডেন। মঙ্গলবার এক টুইটবার্তায় জ্বালানি গ্যাসের সমার্থক শব্দ হিসেবে ‘পুতিন’ উল্লেখ করে বাইডেন বলেন, ‘দেশে পুতিনের দাম কমাতে যা যা করা সম্ভব, তার সবই আমি করব’। চলতি বছরের নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট কংগ্রেসের নির্বাচন হবে। আসন্ন কংগ্রেস নির্বাচনে এই ব্যাপারটি যেন ইস্যু হয়ে না দাঁড়ায়, সেজন্যই এই অভিনব কৌশল অবলম্বন করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট দলের নেতা বাইডেনের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী রিপাবলিকানরা যেন গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধিকে ইস্যু হিসেবে ব্যবহার করতে না পারে, সেজন্যই এই কৌশল নিয়েছেন তিনি। রিপাবলিকান দলের নেতাকর্মীরা অবশ্য এই কৌশলে তেমন প্রভাবিত হননি। কংগ্রেসে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে তেল-গ্যাসের সাম্প্রতিক মূল্য বৃদ্ধিকে ইস্যু হিসেবে তারা ব্যবহার করা শুরু করেছেন ইতোমধ্যেই। সম্প্রতি রিপাবলিকান দল একটি স্টিকার ছেড়েছে বাজারে। সেখানে গ্যাসের পূর্বের দাম ও বর্তমান মূল্য উল্লেখ করা হয়েছে, সেই সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে বাইডেনের ছবি। স্টিকারে গ্যাসের বর্তমান দামের দিকে আঙুল নির্দেশ করে বাইডেন বলছেন, ‘এটা আমি করেছি’।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত কয়েকদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রে জ্বালানি গ্যাসের দামে উর্ধ্বগতি দেখা যাচ্ছে। এর মধ্যে মঙ্গলবার বাইডেন রাশিয়া থেকে তেল-গ্যাস ও কয়লা আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর আরও টালমাটাল অবস্থায় পৌঁছেছে মার্কিন জ্বালানি বাজার। বুধবার দেশটির বেশিরভাগ অঞ্চলে প্রতি গ্যালন তরল জ্বালানি গ্যাসের দাম ৪ ডলারেরও বেশি, আর তেলের দাম ৩০ শতাংশ বেড়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে রয়টার্সের প্রতিবেদনে। করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রায় স্থবির থাকায় যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে মুদ্রাস্ফীতি। বর্তমানে দেশটিতে মুদ্রাস্ফীতির যে হার, গত ৪০ বছরে এমন দেখা যায়নি। তার ওপর জ্বালানির দাম বাড়ায় নাভিশ্বাস উঠছে সাধারণ মার্কিন জনগণের।সাধারণ মার্কিন জনগণের একটি বিশাল অংশ অবশ্য ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার। দেশটির জাতীয় সংবাদমাধ্যম ওয়ালস্ট্রিট জার্নালের বুধবার একটি জরিপ চালিয়েছে। সেখানে দেখা গেছে, ৭৯ শতাংশ মার্কিন জনগণ রাশিয়া থেকে তেল-গ্যাস-কয়লা আমদানি নিষিদ্ধের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন, ১৩ শতাংশ অবস্থান নিয়েছেন বিপক্ষে এবং ভোট দেওয়া থেকে বিরত থেকেছেন বাকি ৮ শতাংশ। তবে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি যদি অব্যাহত থাকে, সেক্ষেত্রে জনমতের এই অবস্থা কতদিন থাকবে, তা নিয়ে রীতিমতো শঙ্কিত বাইডেন প্রশাসন। রয়টার্সকে প্রশাসনের এক কর্মকর্তা এ সম্পর্কে বলেন, ‘অনাগত দিনগুলোতে নিশ্চিতভাবেই জ্বালানির দাম বাড়বে এবং সাধারণ মানুষের ভোগান্তি লাঘবে যা যা করা দরকার তার সবই করা হবে…..দেখা যাক, কী হয়’।